আজ || সোমবার, ২০ মে ২০২৪
শিরোনাম :
 

জাতীয় বীরের ভূমিকা পালন করছেন চিকিৎসক, নার্স, প্রশাসন ক্যাডার, পুলিশ, আনসার, র‌্যাব, সেনাবাহিনীসহ সাংবাদিকরা


নিবন্ধ; করোনা যোদ্ধারা বাঁচলে বাঁচবে দেশ

নাজমুল হক; প্রাক্তন খুলনা বিভাগীয় সিনিয়র রোভার মেট প্রতিনিধি

সাধারণ মানুষের সাথে করোনার বিরুদ্ধে সম্মুখ যোদ্ধাদের মৃত্যু মিছিল বাড়ছে। মৃত্যুর মিছিলে প্রথম ছিলেন ডা. মঈন। মৃত্যুর সংখ্যা প্রতি মুহুর্তে হু হু করে বাড়ছে। উন্নত বিশ্বের কাতারে শক্তিমান যুক্তরাস্ট্র, চীন, সুইজারল্যান্ড। উন্নত প্রযুক্তি ও সর্বাধুনিক চিকিৎসা বিদ্যা থাকার পরেও করোনার ছোবলে তারাই পড়েছে দুমড়ে-মুচড়ে। চীন অনেক ঘাত-প্রতিঘাত ও বহু জীবনের বিনিময়ে প্রাণঘাতী রোগকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। চীনের চিকিৎসকরাও আবার বিশ্বের মডেল হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছে। তবে আমরা কেন চিকিৎসা সেবায় এখনও পিছিয়ে আছি?

করোনা যুদ্ধে দেশের মানুষকে নিরাপদে রাখতে বীরের ভূমিকা পালন করছে চিকিৎসকরা। মানুষকে সচেতন করতে, খেটে খাওয়া মানুষের ত্রাণসহ সকল সহযোগিতা দিতে ২৪ ঘন্টা সেবা দিচ্ছে চিকিৎসক, নার্স, প্রশাসন ক্যাডার, পুলিশ, আনসার, র‌্যাব, সেনাবাহিনীসহ সাংবাদিকরা। দেশের কিছু বিবেক বর্জিত ও অসচেতন মানুষকে ঘরে রাখতে তারা প্রাণপণ লড়ে যাচ্ছেন। হাসপাতালে আক্রান্ত রোগীদের সকল প্রকার চিকিৎসা সেবা দিতে জীবন বাজি রাখছেন চিকিৎসক-নার্স। আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছে সম্মুখ যোদ্ধা চিকিৎসক, পুলিশসহ সাংবাদিকরা। অভিযোগ রয়েছে, পিইপি’র সঠিক মান নিয়ে। যারা জীবন বাজি রেখে ১৭ কোটি মানুষকে সুরক্ষার কাজ করছে তাদের প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট নিয়ে কার্পণ্য কেন? যে হারে চিকিৎসক, নার্সরা আক্রান্ত হতে শুরু করেছে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে হাসপাতালগুলো চিকিৎসক ও নার্স-শূন্য হয়ে যাবে। আগ্রহ হারাবে চিকিৎসা সেবা দিতে। এটি একটি বড় আশঙ্কার ব্যাপার। তখন বিপদের আর শেষ থাকবে না। যার আশনি সংকেত দিয়ে গেছেন ডা. মঈন। কোন মানুষের মৃত্যু আমাদের কাম্য নয়। বিশেষ করে যারা নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে, পরিবার-পরিজন রেখে মানুষের সেবায় নিয়োজিত থেকেছে শুধুমাত্র পেশাগত ও মানবিকতার স্বার্থে কাজ করছে তাদের মৃত্যুতো নয়ই। তারা বাঁচলে দেশ বাঁচবে।

হাসপাতালে যে সকল চিকিৎসক, সেবিকা-সেবকসহ সংশ্লিস্টরা সেবা প্রদান করছেন তাদের প্রণোদনার প্যাকেজ ঘোষণা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। চাকরি সকল সেক্টরের মানুষ করছে, কিন্তু চিকিৎসক-নার্সসহ সম্মুখ যুদ্ধের যোদ্ধারা তাদের জীবন বাজি রেখে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে আমাদের জীবন রক্ষা করছে। আমরা যখন পরিবার-পরিজন নিয়ে সুন্দর সোফায় বসে টিভিতে নিউজ দেখছি ঠিক তখনই প্রতি মুহুর্তে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে চিকিৎসকরা দিন-রাত নিরন্তন পরিশ্রম করে এগিয়ে যাচ্ছে ছন্দের বাংলাদেশ উপহার দিতে। ডা. মঈন জানান দিয়েছে এই যুদ্ধে চিকিৎসকরা সুরক্ষিত নয়। প্রতিটি মুহুর্তে মৃত্যু হাতছানি দিচ্ছে। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নতুন কিছু বার্তা আমাদের সামনে এসেছে। আক্রান্ত হওয়ার পরে তাকে কেন হাসপাতালে রাখা হয়নি? কেন ঢাকায় আনা হয়নি? কেন বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করা হলো? রাষ্ট্র কি আরো দায়িত্বশীল হতে পারতো না জাতীয় এই বীরের জন্য?

করোনায় মানুষ মারা গেলে পরিবারও কাছে যাচ্ছে না। পুলিশ সদস্যসহ প্রশাসনের দায়িত্বশীলরা করোনা ঝুঁকি মাথায় নিয়ে তাদের দাফন করছে; জানাযা পড়াচ্ছে। রাস্তায় জনসমাগম ঠেকাচ্ছে পিইপি ছাড়াই সেনাবাহিনী, পুলিশ, প্রশাসন, আনসার, র‌্যাব। দুর্যোগেও প্রতিটি মুহুর্তে মানুষকে সঠিক তথ্য ও সংবাদ উপস্থাপন করছে সাংবাদিকগণ। ফলে তারাও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারাও যাচ্ছে। তাদের নিরাপত্তা কোথায়? যারা পেশাগত দায়িত্ব পালন ও মানবিকতার কারণে নিজের পরিবার-পরিজন রেখে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে তাদের জাতীয় বীর ঘোষণা করতে হবে। সকল জটিলতা পরিহার করে প্রণোদনার ঘোষিত প্যাকেজ দ্রুত হস্তান্তর করতে হবে। সরকারের প্রতি সম্মুখ যোদ্ধাদের আস্থা বাড়ানোটা বেশি জরুরী। জাতির ক্রান্তি লগ্নে করোনা যোদ্ধাদের হাত ধরেই আধার কেটে আলো আসবেই।


Top